PhD সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা

0
189
PhD সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা
PhD সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা

আসসালামু আলাইকুম। বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আল্লাহর রহমতে আপনারা সবাই ভালো আছেন। আজ আমি আপনাদের কে জানাবো PhD সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা-

আপনি কি আপনার ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবছেন। আপনি কি বিদেশে উচ্চ শিক্ষা নিতে আগ্রহী। আর আপনি কি জানতে চান? যে কে, কিভাবে বিদেশে নাম করা বিশ্ববিদ্যালয় গুলো থেকে PhD নিয়েছেন, তারা কিভাবে আবেদন করেছেন, কি প্রক্রিয়া অনুসরন করেছেন তা জানতে চান? তারা কিভাবে বিদেশে PhD জন্য আপনার দেশ থেকে চলে গিয়েছেন তা জানতে চান? তাহলে বন্ধুরা এই তথ্য গুলো সম্পর্কে ভালভাবে জেনে নিন আর সেগুলো সঠিক ভাবে প্রয়োগ করে বিদেশে PhD করার জন্য চলে যান। নিচে PhD সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হল..

PhD সম্পর্কে বিস্তারিত

আমার পাঠক বন্ধুরা আপনি যে কোর্সটি complete করতে চান না কেন। সে কোর্সটি সমন্ধে ভালভাবে জানতে হবে। আর যদি হয় PhD তাহলে তো কোন কথাই নেই। আর এই high level কোর্স করতে চাইলে তার আগে কোর্স সম্পর্কে বিস্তারিত বিষয় জানতে হবে। তাই এখন আমরা আলোচনায় অন্তরভুক্ত PhD সম্পর্কে সব তথ্য জেনে নেব। PhD সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা নিচে করা হল..

১। PhD কিঃ

PhD শব্দের অর্থ হল doctor of philosophy। আমি আরো একটি বিষয় আপনাদের জানিয়ে রাখি সেটি হল, M.Phil. এবং PhD দুটি বিষয় কিন্তু এক নয়। এই M.Phil. হল masters of philosophy আর PhD হচ্ছে আলাদা বিষয়। এই M.Phil. কে দর্শনের master হিসাবে বলা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষনার উপর ভিত্তি করে এটিকে স্নাকোত্তর ডিগ্রী বলা হয়ে থাকে। এটি হচ্ছে একটি একাডমিক reperch ডিগ্রী। যা একজন শিক্ষার্থী কে একটি বিষয়ে Masters করার স্বীকৃতি দেয় এবং আরো দক্ষতা বাড়ানোর জন্য জ্ঞ্যানার্জন করে।

আমরা এবার PhD সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো আপনি যে বিষয় নিয়ে masters ডিগ্রী অর্জন করেছেন আর আপনি সেই বিষয়ের উপর PhD করতে পারবেন। আপনি নিদিষ্ট বিষয়ের উপর graduation এবং post graduation করতে পারবেন। আর ঐ বিষয়ের উপর যথেষ্ট জ্ঞ্যানার্জন করতে পারবেন। আর এই PhD আর্ন্তরজাতিক ভাবে স্বীকৃত প্রাপ্ত সর্বস্তরের গবেষনার জন্য ডিগ্রী কোর্স।

যা বিশ্ববিদ্যালয় গুলো দ্বারা প্রদত্ব। এমনো অনেক শিক্ষার্থী তাদের স্নাকোত্তর শেষ করেও তারা পড়াশুনা চালিয়ে যান। সুতরাং তাদের দুটি বিকল্প পথ রয়েছে, তার একটি হলো PhD অন্যটি হলো M.Phil.। আর এই গুলো হলো গবেষনা মুলক কোর্স। আর এই কোর্স গুলো শিক্ষার্থীদের বেছে নেওয়া খুব কঠিন হয়ে পরে। তাদের মাঝে অনেক প্রশ্ন আসে কোনটি ঠিক, কোনটি বেশি ভাল, কোনটি অন্যটির থেকে ভাল।

M.Phil. কি তা আমি আপনাদের আগেই জানিয়ে দিয়েছি। আর PhD হলো, বিশ্ববিদ্যালয় কতৃক শিক্ষার্থীদের দ্বারা নির্বাচিত বিষয়ের উপর গবেষনা মূলক কাজের জন্য দেওয়া হয় সর্বোচ্চ ডিগ্রী। PhD কোর্স হচ্ছে, আপনি যে বিষয়ের উপর PhD কোর্স শেষ করতে চান। সেই বিষয়ের উপর আপনার যথেষ্ট ধারনা হয়ে যাবে।

আপনি ঐ বিষয়ের উপর expert হয়ে উঠবেন। একই বিষয়ের উপর একজন masters ডিগ্রী ধারী প্রার্থী এবং ঐ একই বিষয়ের উপর একজন PhD ডিগ্রীধারী প্রার্থীর পার্থক্য অনেক আলাদা। তাই এই PhD ডিগ্রীধারী প্রার্থী masters ডিগ্রী ধারী প্রার্থীর থেকে অনেক বেশি জ্ঞ্যানার্জন করে থাকেন। আর তাই নয় এই ডিগ্রী আপনি অর্জন করতে পারলেই আপনার নামের আগে doctor উপাধী পেয়ে যাবেন। তাই এই PhD এর সপ্ন নিয়ে অনেক শিক্ষার্থী এতে অংশগ্রহন করে থাকে।

আর এখন আমরা আলোচনা করবো কোর্স Duration নিয়ে। এই PhD কোর্সটি সাধারনত ২-৩ বছরের হয়ে থাকে। কোন কোন ক্ষেত্রে এই কোর্সটি ৫-৮ বছররের হয়ে থাকে। যারা নিজেদের টাকা খরচ করে এই কোর্সটি complete করে থাকে। তারা চায় ২-৩ বছরের মধ্যে কোর্সটি complete করতে। কিন্তু যারা JRF এর মাধ্যমে কোর্সটি complete করার সু্যোগ পান। তারা ৫ বছর পর্যন্ত কেটে দেন।

২। PhD করতে যোগ্যতাঃ

আপনি যদি এই program অংশগ্রহন করতে চান তাহলে আপনাকে post graduation complete করতে হবে। আর post graduation এ আপনাকে ৫৫% মার্ক পেতে হবে। এক্ষেত্রে post graduation করতে আপনাকে Ma, MSc ,MCOM ইত্যাদি থাকতে হবে। আর আপনি যে বিষয়টি নিয়ে PhD করতে যাবেন তা অবশ্যই আপনার post graduation এ থাকতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি মনে রাখবেন সব বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম কানুন এক রকম নয়।

প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয় তার নিজের গর্বের জন্য নিয়ম আলাদা করে থাকে। আপনি কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে PhD করতে পারবেন আপনার post graduation ৫৫% থাকলে। আর সে ক্ষেতে আপনার আর কিছু লাগবে না। আবার অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আছে যেখানে আপনার post graduation থাকলে হবে না। তার সাথে আপনাকে net, JRF পরীক্ষা দিতে হবে। যদি ধরে নেওয়া যায়, আপনি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে PhD করবেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে ২ বছরের M.Phil. ডিগ্রী করতে হবে। আর তা নাহলে আপনি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে PhD করতে পারবেন না। এখন আমরা net এবং JRF সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আকারে কিছু জেনে নেব।

Net এবং JRF: Net হলো, masters ডিগ্রী complete করার পর আপনাকে সাধারন ভাবে একটি পরীক্ষা দিতে হবে। আর এই Net এর অর্থ হলো national eligibility test। আপনি এক্ষেত্রে অবশ্যই একটি কথা মনে রাখবেন, Net পাশের থেকে JRF পাশ করা অনেক সুবিধা পেয়ে থাকবেন।
JRF হলো, junior Research Fellowship। আপনি যদি JRF truck করতে পারেন। তাহলে আপনি UGC অর্থ্যাৎ united Grants commission থেকে আপনার PhD complete করার সব খরচ পেয়ে যাবেন। আপনি প্রায় প্রতি মাসে ২৫০০০-৩০০০০ টাকা পেয়ে যাবেন। আর এই টাকাটা তারাই পাবেন যারা এই JRF qualify করতে পারবেন একমাত্র তারাই। আপনি আরো একটি কথা মাথায় রাখবেন সেটি হলো, যেসব উচু মানের বিশ্ববিদ্যালয়ে PhD করার সুযোগ রয়েছে। সেই top level বিশ্ববিদ্যালয় গুলো এই net এবং JRF complete করা qualify শিক্ষার্থীদের বাছাই করে নেয়। এক্ষেত্রে আপনাদের চিন্তার কোন কারন নেই। এমন অনেক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে আপনার post graduation এ ৫৫% থাকলে আপনি PhD করার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

৩। ভর্তি প্রক্রিয়াঃ

আপনি কোন নামিদামি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে PhD complete করবেন। সেই বিশ্ববিদ্যালয় এর কাগজ পত্র আপনাকে ঠিক ঠাক করে রাখতে হবে। অথ্যাৎ প্রথম থেকে আপনাকে post graduation এ ৫৫% নাম্বার রাখতে হবে। আর এটাও আপনি মনে রাখবেন কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয় কিন্তু ৬০% নাম্বার চেয়ে থাকে post graduation এ। তাই আপনার যতটা সম্ভব অনেক পরিশ্রম করে হলেও যত বেশি নাম্বার তোলা যায় post graduation এ তার চেষ্টা করতে হবে। তারপর আপনাকে net এবং JRF এর মত পরীক্ষা গুলোতে বসে truck করতে হবে। এরপর কিছু বিশ্ববিদ্যালয় এর নিজস্ব entrance exam বা প্রবেশিকা পরীক্ষা। এই প্রবেশিকা পরীক্ষায় আপনাকে পাস করতে হবে। উর্ত্তীন্য হয়ে আপনি ঐ নিদিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবেন। এরপর আপনি যদি চান যে রেগুলার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে PhD না করেও নেতাজী সুভাষ ওপেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে PhD করতে পারবেন।

এখন আমরা কিছু top ranking বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে জেনে নেব। আর এই বিশ্ববিদ্যালয় গুলো থেকে PhD করতে পারলে আপনার নামের উপাধি পাওয়া যায়। যেমন,
ক) university of Hyderabad.
খ) university of Delhi.
গ) Indiana institute of science (Bangalore).
ঘ) Indiana institute of technology (Delhi).
জ্ঞ) Indiana institute of technology (madras).
চ) Indiana institute of technology (Kanpur).
ছ) Indiana institute of technology (Kharagpur) etc.
এরকম আরো অনেক top level এর বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে সেখান থেকে আপনি PhD অর্জন করতে পারলে আপনার সু-নাম অনেক বেরে যাবে।

৪) PhD কোর্স ফিঃ

যদি কোন প্রার্থী JRF complete করে PhD করতে সুযোগ পায়। সেক্ষেত্রে তার এক টাকাও খরচ হবে না। কারন আপনি JRF truck করতে পারলেই PhD করার জন্য আপনাকে UGC অথ্যাৎ united Grants commission প্রতি মাসে আপনাকে ২৫০০০-৩০০০০ হাজার টাকা PhD করার জন্য দিয়ে দেবে। আর আপনি যদি post graduation অথবা post graduation এর সাথে net exam truck করে PhD করার সুযোগ পান। তাহলে সেক্ষেত্রে আপনার টাকা অনেক বেশি খরচ হয়ে যাবে। আপনার কত টকা খরচ হবে তা নির্ভর করবে আপনি কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে PhD করতে যাচ্ছেন। তার কারন প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় কিন্তু তার ফি নির্ধারন করে থাকে। তবু আপনি একটা ধরে রাখুন, বছরে আপনার প্রায় এক লক্ষ টাকাও বেশি খরচ হতে পারে।

৫। PhD করলে ক্যারিয়ারের কি পরির্বতন হবেঃ

PhD করলে আমাদের ক্যারিয়ারের কি উন্নতি হবে। আর এত কষ্ট করে পড়াশুনা করলাম, এত গুলো টাকা খরচ করলাম আর এত কিছু করে PhD ডিগ্রী ধারন করলাম তাহলে এখন আমার লাভ টা কি। সেটি হলো, সারা জীবনের জন্য আপনার নামের প্রসংসা বেরে যাবে। অর্থ্যাৎ আপনার নামের আগে সারা জীবনের মত doctor কথাটি যুক্ত থাকবে। এরকম অনেক শিক্ষার্থী আছেন যারা নামের আগে doctor পাওয়ার জন্য এই PhD এর আসরে ঝাপিয়ে পরেন।

এছাড়াও আপনি PhD করে কোন ডিগ্রী কলেজের প্রফেসর হতে পারবেন। আর আপনার PhD থাকলে আপনি প্রফেসরের জন্য যে কোথাও আবেদন করতে পারবেন। আর PhD থাকলেই যে আপনি প্রফেসর হবেন সেটা কিন্তু নয়। কারন প্রফেসর হতে গেলে আপনাকে কিছু নিয়ম নীতি অনুসরন করতে হবে। তাহলেই আপনি প্রফেসর হতে পারবেন। এছাড়া আপনি যে বিষয়ের উপর PhD complete করেছেন। সেই বিষয়ের উপর যে কোন প্রতিষ্ঠান থেকে research করার সুযোগ পাবেন। যদি ধরে নেই আপনি পদার্থ বিজ্ঞান নিয়ে PhD করেছেন। আর এমন একটি প্রতিষ্ঠানে পদার্থ বিজ্ঞানের উপর গবেষনা করা হচ্ছে। আর সেখানে আপনি আপনার যোগ্যতার প্রমান দিয়ে একটা ভাল চাকরী পেয়ে যেতে পারেন।

আমার পাঠক বন্ধুরা PhD সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা নিয়ে আপনাদের যে প্রশ্ন গুলো ছিল। আশা করি তা আর নেই। তাই আমি আশা করি যার যোগ্যতা এবং টাকা আছে। তারা এখনি PhD করার জন্য আবেদন করবেন। এই পোষ্টটি সম্পর্কে আপনাদের কোন মতামত থাকলে কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দেবেন। সবার জন্য শুভ কামনা রইলো। ধন্যবাদ।