বিদেশে উচ্চশিক্ষা : যেসব তথ্য জেনে নেয়া প্রয়োজন

0
209
বিদেশে উচ্চ শিক্ষা যেসব তথ্য জেনে নেয়া প্রয়োজন বিদেশে উচ্চশিক্ষা অর্জনে যা জানা দরকার
বিদেশে উচ্চশিক্ষা যেসব তথ্য জেনে নেয়া প্রয়োজন

বিদেশে উচ্চ শিক্ষার জন্য যেসব তথ্য জানা প্রয়োজন

আপনি যদি বিশ্বের নাম করা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশে উচ্চ শিক্ষা এর জন্য পড়তে চান তাহলে আপনার পূর্ব পরিকল্পনা থাকতে হবে। বিদেশে উচ্চশিক্ষা অর্জনে যা জানা দরকার সেসব কিছু আগে থেকেই জেনে সব প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে। কমপক্ষে এক বছর আগে থেকে সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ শুরু করতে হবে। সেই সাথে আপনার আর্থিক সামর্থ্যটা বুঝে বিশ্ববিদ্যালয় বাছাই করে নিতে হবে।

বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা এইচএসসি পাস করার পর যেমন, ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, কুষ্টিয়া ইত্যাদি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চায়। আবার অনেকে বিদেশে উচ্চশিক্ষা এর জন্য পড়ার কথাও ভাবে। আজকে আমরা আলোচনা করব বিদেশে উচ্চ শিক্ষা এর জন্য যেসব তথ্য জেনে নেয়া প্রয়োজন সেই বিষয় নিয়ে। আর কথা না বাড়িয়ে চলুন শুরু করি আজকের আলোচনা।

বিদেশে উচ্চশিক্ষা : বিশ্ববিদ্যালয় ও দেশ বাছাই

একজন শিক্ষার্থীকে প্রথমে ঠিক করতে হবে সে কোন দেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহন করতে চায়। তার মূল কারণ হল, একেক দেশের পড়াশোনার খরচ একেক রকম। দেশ বাচাই করার পর আপনাকে ঠিক করতে হবে যে, আমার সাবজেক্ট ও আর্থিক সামর্থ্যের সঙ্গে মিলিয়ে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া যেতে পারে। এক্ষেত্রে একেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম-কানুন একেক রকম ও টিউশনি ফির পার্থক্য আছে।

যুক্তরাজ্যসহ দেশেই সেপ্টেম্বর মাসে ভর্তির সেশন শুরু হয়ে থাকে। সে জন্য এক বছর আগে থেকেই প্রস্তুতি নেয়ে উচিৎ। বিশেষ করে ইংরেজির ভর্তি চাহিদা যেমন, আইইএলটিএস বা অন্যান্য চাহিদা প্রস্তুতি করা, আবেদন ইত্যাদি কমপক্ষে একবছর আগে থেকে সব কিছু শুরু করতে হবে।

আপনি যে বিষয়ে বিদেশে উচ্চ শিক্ষা এর জন্য যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চাচ্ছেন। সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের চাহিদা অনুযায়ী আপনাকে প্রস্তুতি নিতে হবে। সেই সঙ্গে দেখতে হবে আপনার পছন্দের সাথে এবং আর্থিক সামর্থ্য মিল আছে কিনা?

বিদেশে উচ্চশিক্ষা অর্জনে  প্রস্তুতি কিভাবে নিতে হবে

০১। ভাষার দক্ষতার প্রস্তুতি

বিদেশে উচ্চশিক্ষা অর্জন করতে হলে আপনাকে সর্ব প্রথম লক্ষ্য রাখতে হবে ভাষা দক্ষতায়। যেমন আইইএলটিএস, টোফেল, স্যাট অথবা জিআরই। একেকটি দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে ভাষা দক্ষতার চাহিদার পার্থক্য হতে পারে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় দেশগুলোর বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে আইইএলটিএস ব্যান্ড স্কোর অন্তত ৬ পয়েন্ট থাকতে হবে। কিন্তু অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে এর চেয়ে বেশি চাইতে পারে। তবে আমেরিকাসহ অনেক দেশের কোন কোন সাবজেক্টে টোফেল, স্যাট বা জিআরই দরকার হতে পারে।

ইউরোপীয় দেশগুলো যেমন, সুইডেন, ফ্রান্স, জার্মানি, নরওয়ে এসব দেশে পড়তে গেলে যেমন ইংরেজি পড়াশোনা করার সুযোগ আছে, আবার এই ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই সেই দেশের ভাষা জানতে হবে। বিশেষ করে আপনি যদি জার্মানিতে বিনা বেতনে পড়তে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই জার্মানি ভাষা শিখতে হবে।

০২। পড়াশোনার ফলাফল ভল করার প্রস্তুতি

বিদেশে উচ্চ শিক্ষা অর্জন করতে হবে আপনাকে আপনার একাডেমিক ফলাফল ভাল করতে হবে। আপনার পড়াশোনা কেমন বা আপনার পড়াশোনার ফলাফল কেমন তার উপর বিশ্ববিদ্যালয় বা বিষয় ভিত্তিক ভর্তির ব্যাপারটিও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নির্ভর করে।

আপনি বিদেশে উচ্চশিক্ষা এর জন্য পড়তে চান কিন্তু আপনি ইংরেজি জানেন না তা কি করে হয়। আপনি যদি ইংরেজি জানেন তাহলে বা আপনার ইংরেজি দক্ষতা ভালো থাকে তাহলে বিষয় ভিত্তিক সাবজেক্ট পাওয়া সহজ হবে। তাই উচ্চশিক্ষার জন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয় কেমন ফলাফল চায় তার সম্পর্কে ধারনা নিয়ে সে ভাবে পড়াশোনা করে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে।

০৩। ভর্তির নিয়ম বা প্রক্রিয়া জানা

বিদেশে উচ্চ শিক্ষা অর্জনের জন্য আপনার জানা দরকার বিদেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়া কি রকম। ভর্তির আবেদন করার পূর্বে আপনাকে বিশ্ববিদ্যালয় ও আপনি কোন বিষয়ে পড়তে চান তা ঠিক করতে হবে তারপর আপনাকে আবেদন করতে হবে। কিছু দেশ আছে যেমন, নরওয়ে, নেদারল্যান্ডস, সুইডেন ইত্যাদি এই সব দেশের কেন্দ্রীয় ভর্তির ব্যবস্থাপনার ওয়েবসাইট আছে।

আপনি যদি সেখানে আবেদন করেন তাহলে আপনার যোগ্যতা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় বেছে দেয়া হবে। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করতে হয়। আপনাকে মনে রাখতে হবে আবেদন করার সময় আপনার পড়াশোনার সকল সনদ স্কান করে আপলোড করতে হবে। আর আপনার আবেদন যদি গ্রহণ করে তাহলে ভিসার আবেদনের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।

০৪। আর্থিক সচ্ছলতার প্রমাণপত্র প্রস্তুত করা

বিদেশে উচ্চ শিক্ষার জন্য আপনার আর্থিক সচ্ছলতার প্রমান দিতে হবে। এবং এই বিষয়টি আগে থেকে জেনে আপনাকে সেভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। আপনার আর্থিক কেমন তা আবেদন করার সময় আর্থিক সচ্ছলতার প্রমাণ আপলোড করে দিতে হবে। প্রায় সব দেশেই শিক্ষার্থী ভিসার ক্ষেত্রে দূতাবাসের কর্মকর্তারা দেখতে চায় যে, শিক্ষার্থীর পরিবার পড়াশোনা ও থাকা খাওয়ার খরচ সে বহন করতে সক্ষম কিনা।

দেশের উপর ভিত্তি করে টিউশনি ফি হিসাব করে অন্তত প্রতি বছরে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা থেকে শুরু করে ২০ থেকে ২২ লাখ টাকা খরচ করার সামর্থ্য থাকতে হবে। সেই সাথে শিক্ষার্থীর থাকা-খাওয়া, যাতায়াত, পোশাক, হাতখরচ, চিকিৎসা যোগ করতে হবে।

লন্ডনের ক্ষেত্রে যেমন বছরে আরো অন্তত ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখতে হবে। এই খরচের টাকা ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে প্রমাণ করতে হবে। কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে অগ্রিক এক বছরের সেমিস্টার ফি জমা দিতে হয়।

০৫। আবাসন বা বাসস্থান ঠিক করা

বিদেশে উচ্চ শিক্ষা অর্জনে বাধার একটি কারণ হল আবাসন ব্যবস্থা। আপনি বিদেশে পড়াশোনার জন্য বিদেশ গেলে আপনার থাকার ব্যবস্থার কথা টা মাথায় রাখতে হবে। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজস্ব আবাসন বা বাসস্থান আছে। প্রত্যেকটি শিক্ষার্থীকে আগেই জানাতে হবে তারা সেই সুবিধা নিতে চায় কিনা। শিক্ষার্থীরা যদি চায় তাহলে তারা নিজেরা আলাদাভাবে বাসা ভাড়া করেও থাকতে পারে। এবং নিজেকে রান্না করে খেতে হবে। রান্না করে খাওয়ার ব্যবস্থা আছে।

০৬। বৃত্তির জন্য আবেদন সম্পর্কিত জ্ঞান

বিদেশে উচ্চ শিক্ষার জন্য বৃত্তি বা স্কলারশিপ অনেক জরুরী। আপনি বৃত্তি পেতে চান কিনা তা আবেদন করার সময় তা উল্লেখ করে দিতে হবে। আর সেই সময় বৃত্তির জন্যই প্রস্তুতি নিতে হবে। ভারত, তুরস্ক, জার্মানি, জাপান, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারিভাবে বিভিন্ন ধরনের বৃত্তির ব্যবস্থা আছে।

বিশ্বের কয়েকটি দেশে বৃত্তি বা স্কলারশিপ দিয়ে থাকে। সে রকম করেকটি দেশ যারা স্কলারশিপ দিয়ে থাকে যেমন, জাপানের মনবুশো বৃত্তি ও মনবুকাগাকুশো বৃত্তি, এমএইচটিটি স্কলারশিপ প্রোগ্রাম, জার্মানির ডিএএডি, অস্ট্রেলিয়ার ডেভেলপমেন্ট স্কলারশিপ, যুক্তরাজ্যের কমনওয়েলথ স্কলারশিপ, শেভেনিং স্কলারশিপ, যুক্তরাষ্ট্রের ফুলব্রাইট ফরেন স্টুডেন্টস প্রোগ্রাম, কানাডার হাম্বার ইন্টারন্যাশনাল এন্ট্রান্স স্কলারশিপ ইত্যাদি। তাছাড়া প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়েই শিক্ষার্থীদের আংশিক বা পূর্ণ বৃত্তি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।

বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের ওয়েবসাইটের বিভিন্ন দেশের দূতাবাস বা সরকারি বৃত্তির নোটিশ পাওয়া যাবে। অনেক ক্ষেত্রে অনলাইনেই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে বৃত্তির আবেদন করা যায়।

০৭। ভিসা প্রসেসিং

বিদেশে উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য ভিসা সম্পর্কিত তথ্য জেনে নেওয়া প্রয়োজন। অনেকে এমন আছে যারা বিদেশে উচ্চ শিক্ষার জন্য প্রস্তুত কিন্তু ভিসা প্রসেসিং এর কারণে সেই দেশে গিয়ে উচ্চ শিক্ষা নিতে ব্যর্থ হয়েছে। আপনাকে আগে থেকেই ভিসা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় সমস্ত কিছু জানতে হবে ও সব কিছু প্রস্তুত করে রাখতে হবে।

ভিসার জন্য আবেদন করার সময় কাগজ পত্রের সাথে আপনাকে অবশ্যই সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির অফার লেটার দিতে হবে। সেই সাথে শিক্ষার্থীর আর্থিক সক্ষমতার প্রমাণপত্র। অর্থাৎ ব্যাংক হিসাবে নিজের নামে বা গ্যারান্টারের নামে পর্যাপ্ত অর্থের ব্যবস্থা থাকতে হবে। শিক্ষার্থীর ভিসার জন্য কিছু শর্ত থাকতে পারে।

বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য ভর্তির প্রক্রিয়ায় যেসব তথ্য জানতে হবে

বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করার জন্য যেসব যেতে ইচ্ছুক, তার কয়েকটি দেশের ভর্তির প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে আপনাকে যেসব তথ্য জানতে হবে তা নিচে দেওয়া হল-

০১। যুক্তরাজ্যে উচ্চশিক্ষা অর্জনে যা জানা দরকার

যুক্ত্রাজ্যে উচ্চশিক্ষা অর্জনের ক্ষেত্রে অনেক তথ্য জানতে হবে। কিন্তু উচ্চ শিক্ষা অর্জনের জন্য যেসব তথ্য জানা দরকার তা কোথায় পাব? ঢাকায় ব্রিটিশ কাউন্সিলের আঞ্চলিক সমন্বয়ক তাওসিফ মান্নান খান বলেন, যুক্তরাজ্যে যারা স্নাতক বা আন্ডারগ্রাজুয়েট পর্যায়ে পড়তে চান, তারা UCAS ওয়েবসাইটের গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি সংক্রান্ত সকল কাজ করে নিতে পারেন।

কারণ এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের সব কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ভর্তি প্রক্রিয়া তথ্য, আবেদনের প্রক্রিয়াসহ সব তথ্য পাওয়া যাবে। তাছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে সেখানকার ভর্তি তথ্য, খরচ বা আবেদন প্রক্রিয়া ও অনলাইনে আবেদন করার সকল তথ্য পাওয়া যাবে।

তিনি আরও বলেছে, এইসব বিশ্ববিদ্যালয়ে বা UCAS ওয়েবসাইট দিয়ে সরাসরি আবেদন করা যায়। আর আবেদনের সময় আপনাকে অবশ্যই স্ক্যান করে সকল কাগজ পত্র আপলোড করে দিতে হবে। আবেদন করার পরে আপনাকে কুরিয়ায় করে হার্ড কপি পাঠাতে হতেও পারে।

আর আপনি যদি সেই বিসশ্ববিদ্যালয়ে বাছাই হন তাহলে আপনাকে ই-মেইলের মাধ্যমে তা জানিয়ে দিবে। আর সেই সাথে আপনাকে চিঠি পাঠিয়ে দেবে। সেই চিঠি নিয়ে আর্থিক সক্ষমতার প্রমাণপত্রসহ ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।

যুক্তরাজ্যে আন্ডার গ্রাজুয়েট কোর্স গুলো তিন বছরের হয়ে থাকে। পড়াশোনার সময় শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য একজন শিক্ষার্থী পাঠ টাইম কাজ করতে পারবে। একজন শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষা অর্জন করে বাংলাদেশে ফেরত আসতে হবে। তবে সেখানে মাস্টার্স বা অন্য কোন কোর্সে ভর্তি হলে পুনরায় ভিসার আবেদন করে সময় বাড়িয়ে নিতে হবে। ঢাকায় ব্রিটিশ কাউন্সিলের কর্মকর্তার সাথে কথা বলে এ বিষয়ে সকল তথ্য বা পরামর্শ নেয়া যাবে।

০২। যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা অর্জনে যা জানা দরকার

যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা অর্জনের ক্ষেত্রেও ভর্তি, ভিসা প্রসেসিং ইত্যাদি সম্পর্কে আগে থেকেই অবগত থাকতে হবে। ঢাকায় আমেরিকান উচ্চশিক্ষা সেন্টারে গিয়ে এ ব্যাপারে পরামর্শ ও তথ্য সহায়তা নেয়া যেতে পারে। শিক্ষা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ওয়েবসাইট ‘education.us’ এ দেশটিতে ভর্তি, বিশ্ববিদ্যালয়, ডেডলাইন, প্রক্রিয়া সম্পর্কে সকল তথ্য পাওয়া যাবে।

পাঁচটি গাইডলাইন দেয়া রয়েছে, আমেরিকান সেন্টারের ওয়েবসাইটে যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চ শিক্ষার ব্যাপারে। প্রথমেই গবেষণা, কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চান, আপনার পছন্দের বিষয় সেখানে আছে কিনা, টিউশন ফি কত, ইংরেজির জন্য আইইএলটিএস, নাকি টোফেল অথবা আর কি প্রমাণ চাইছে ইত্যাদি দেখে বাছাই করতে হবে। এরপর পড়াশোনার খরচ বা বৃত্তির বিষয়টি ঠিক করে নিতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় ঠিক হওয়ার পরে অনলাইনেই আবেদন করতে হবে এবং প্রয়োজনে সেমিস্টার ফি পাঠাতে হবে। এরপরে ভর্তির সুযোগ পেলে ভিসার আবেদন করতে হবে। আমেরিকায় একেকটি স্টেট ভেদে বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচের অনেক তারতম্য হতে পারে।

০৩। অস্ট্রেলিয়ায় উচ্চশিক্ষা অর্জনে যা জানা দরকার

বিদেশে শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা অর্জনে সহায়তা করে, এমন একটি প্রতিষ্ঠান স্টুডেন্ট ওয়ার্ল্ডের কর্মকর্তা আমরিন কবির বলেন, অস্ট্রেলিয়ার জন্য আইইএলটিএস এবং এইচএসসির পরীক্ষার জিপিএ খুব গুরুত্বপূর্ণ। এর ওপরে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পাওয়া নির্ভর করে। এটা যত ভালো হবে, সে তত ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাবেন।

তিনি আরও বলেন, যদিও প্রকাশ্যে বলা হয় না, তবে ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে আরও ভালো আইইএলটিএসের স্কোরটি অনেকটা ভূমিকা রাখে। বিদেশে উচ্চশিক্ষা এর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদন থেকে শুরু করে সব মিলিয়ে প্রায় দুই মাসের মতো সময় লাগতে পারে।

এছাড়া তিনি আরও বলছেন, জিপিএ কম থাকলে অনেক সময় শিক্ষার্থীরা সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাচেলর কোর্সে ভর্তির চেষ্টা না করে বরং অস্ট্রেলিয়ায় কোন ডিপ্লোমা কোর্সে যেতে পারেন। সেটা সম্পন্ন করে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে কাঙ্ক্ষিত কোর্সে ভর্তিতে সুবিধা পাবে। সায়েন্স প্রকৌশলের মতো বিষয় আইইএলটিএস স্কোর ৭  থাকা দরকার।

০৪। কানাডায় উচ্চশিক্ষা অর্জনে যা জানা দরকার

কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার ভর্তি হতে হলে আইইএলটিএস অবশ্যই থাকতে হবে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ওয়েবসাইট ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা সরাসরি যোগাযোগ করতে পারে। বিদেশে উচ্চ শিক্ষা এর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ভর্তি তথ্য আবেদনের প্রক্রিয়াসহ সকল তথ্য বিস্তারিতভাবে দেওয়া থাকে। সকল কাগজপত্রের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সেমিস্টার ফি অগ্রিম অবশ্যই পাঠাতে হবে।

তারা শিক্ষার্থীরা ভর্তির সুযোগ পেলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অফার লেটার পাঠানো হয়। এরপর সেই লেটার নিয়ে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। সেখানেও পড়াশোনা করে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী হিসাবে চাকরি ও স্থায়ী বসবাসের সুযোগ তৈরি হতে পারে।

০৫। ভারতে উচ্চ শিক্ষা অর্জনে যা জানা দরকার

বাংলাদেশের প্রতিবেশী ভারতেও অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ আছে। কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার খরচ অনেকটাই বাংলাদেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার মত। বাংলাদেশসহ বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ভারত সরকারের নানা স্কলারশিপ রয়েছে। ঢাকার ভারতীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে যোগাযোগ করে বিস্তারিত জানে নিয়ে আবেদন করতে পারেন।

০৬। চীনে উচ্চশিক্ষা অর্জনে যা জানা দরকার

গত কয়েক বছর ধরে অনেক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী চীনে উচ্চশিক্ষা অর্জন করতে যাচ্ছেন। ঢাকার বেশ কিছু শিক্ষার্থী সহায়ক প্রতিষ্ঠান এক্ষেত্রে সহায়তা করে থাকে। তবে চীনে পড়তে গেলে আপনাকে আগে চীনা ভাষা শিখতে হবে। ঢাকায় এখন এরকম বেশ কিছু ভাষা শেখানোর প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। আপনি সেখানে চীনা ভাষা শিখতে পারেন। চীনে বিদেশি শিক্ষার্থী হিসাবে সেখানে খাবারে খাপ খাওয়াতে খানিকটা সমস্যা হলেও পড়াশোনার সুযোগ মান এবং থাকার ব্যবস্থা খুবই ভালো।

০৭। জার্মানিতে উচ্চশিক্ষা অর্জনে যা জানা দরকার

বিদেশে উচ্চ শিক্ষা অর্জনের জন্য জার্মানি হয়ে উঠেছে একটি আগ্রহের দেশ। জার্মানির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি ও জার্মান ভাষায় পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে যেমন টিউশন ফি দিতে হয়, আবার জার্মান ভাষার অনেক প্রোগ্রামের ক্ষেত্রে এখনো জার্মানিতে বিনা বেতনে পড়াশোনা করার সুযোগ রয়েছে। তবে সেজন্য জার্মান ভাষার দক্ষতা প্রমাণ করতে হবে। জার্মান ভাষা না জানা থাকলে সম্ভব নয়। জার্মানিতেও পড়াশোনার পাশাপাশি কাজের সুযোগ আছে। পড়াশোনা শেষে অস্থায়ীভাবে থাকার অনুমতিও পাওয়া যায়।

০৮। ইউরোপের অন্যান্য দেশে উচ্চশিক্ষা অর্জনে যা জানা দরকার

বাংলাদেশ থেকে ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড, ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস, শ্লোভাকিয়াসহ অনেক দেশে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করতে যাচ্ছেন। এক্ষেত্রে যারা ইংরেজি ভাষায় পড়তে চান, তাদের আগেই দেখে নিতে হবে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি ভাষায় কোন কোর্সগুলো রয়েছে।

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা এই ছিল বিদেশে উচ্চশিক্ষা অর্জনে প্রস্তুতি এবং যা জানা দরকার। উচ্চশিক্ষা অর্জনে কিভাবে প্রস্তুতি নিবেন এই সম্পর্কে আপনারা আরও পড়তে পারেন বিদেশে উচ্চশিক্ষা জেনে নিন প্রস্তুতিতে করণীয়। আল্লাহ হাফেজ।